শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ০১:০৭ পূর্বাহ্ন
ফরিদপুর প্রতিনিধি:: ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার চরভদ্রাসন বাজারে নাতিকে দাদার দেওয়া পজিসনে ২৮ বছর যাবত ব্যবসা করে আসছে নাতি বাচ্চু চৌধুরী। সেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি জোরপূর্বক দখল করছে চাচা ইউসুফ আলী চৌধুরী।
এই অভিযোগ করেছে ইউসুফ আলী চৌধুরীর আপন ভাতিজা বাচ্চু চৌধুরী। তিনি জেলাপ্রশাসক ও উপজেলানির্বাহীঅফিসারেরনিকটলিখিতঅভিযোগ দিয়েছেন।
বাচ্চু বলেন, বিগত ২৮ বছর আগে আমার দাদা (বর্তমান মৃত) তোরাফ আলী চৌধুরী একটি স্ট্যাম্পে লিখিত করে আমাকে ৩০ ফুট লম্বা ১২ ফুট চওড়া পজিশনে জায়গা বুঝে দিয়েছিলেন। আমি উক্ত জায়গা ২৮ বছর ভোগ দখলকারী অবস্থায় ব্যবসা করে আসছিলাম। ২০২০ সালে আমার চাচা উক্ত দোকান তার বলে আমাকে জোড় করে বের করে দেয় এবং আমার দোকানটি দখ লকরে নেয়।
এ ব্যাপারে আমি চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগ দিলে তিনি চরভদ্রাসন ইউনিয়ন ভুমি অফিসার কে তদন্ত করার দায়িত্ব দেন।
ইউনিয়নের ভুমি অফিসার একে এম শহিদুল ইসলাম পহেলা জুন ২০২১ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি আশেপাশের লোকজনের সাথে কথা বলে জানতে পারেন বাচ্চু চৌধুরী ঐ জমিতে র্দীঘ ২৮ বছর ব্যবসা করে আসচ্ছে। কিছুদিন আগে বাচ্চুর চাচা ইউসুফ আলী চৌধুরী জোরপূর্বক ভাতিজাকে নামিয়ে দিয়ে দোকান ঘরটি দখল করে নেয়।
এদিকে এবিষয় কোন প্রতিকার না পেয়ে বাচ্চু চৌধুরী জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করেন। জেলা প্রশাসক বিষয়টি তদন্তের জন্য চরভদ্রাসন উপজেলায় পাঠিয়ে দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার আবেদনটি ভুমি অফিসে তদন্তের জন্য পাঠায়।
উপজেলা ভূমি অফিসের কানুনগো মোঃ মিজানুর রহমান তদন্ত করে জানতে পারে এই পজিসনে ভাতিজা বাচ্চু চৌধুরী ২৮ বছর যাবত ব্যবসা করে আসছে। তবে তিনি জমির মালিকানার স্বপক্ষে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারিনি। তবে চাচা ইউসুফ আলী ২০২০ সালে আমেনা বেগম নামে একজনের নিকট থেকে এই জমি ক্রয় করছেন মর্মে একটি দলিল দাখিল করেন।
এ বিষয়ে চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে শুনানির জন্য দু’পক্ষকে ডেকে ছিলাম। উভয়পক্ষ সময় চাওয়ায় ঈদের পরে আবার বসে কাগজপত্র যাচাই করে সিন্ধান্ত নিবো। প্রয়োজনে আরও তদন্ত করা হবে।
এ বিষয়ে চাচা ইউসুফ আলী চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এই জমি আমি ১৯৮৪ সালে তৎকালিন ইউএনও নুরুল হুদাকে বলে ঘর তুলি, তখন এই জমির কোন মালিক খুজে পাওয়া যাচ্ছিল না। আমি সেখানে ঘর তুলে পরপর দুইজনকে ভাড়া দিই। আমার এই ভাতিজার আর্থিক অবস্থা ভালোনা থাকায় আমি আমার এই ভাতিজা বাচ্চুকে ১০ হাজার টাকা পুঁজি দিয়ে আমার দোকানটি ওকে মাসিক দুই হাজার টাকায় ভাড়া দিই। এর সত্যতা যাচাই এর জন্য বাচ্চুর বাবা, মা এর কাছে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। পরবর্তিতে জমির মালিক খুজে পেয়ে ২০২০ সালে আমেনা বেগম নামের জমির মালিকের নিকট থেকে সাব কবলা দলিল করে নিই। এই জমির দখলদার হিসেবে ২০০৬ সালের পেরিফেরি তালিকায় ৩৭০ নং দোকানের মালিক হিসেবেও আমার নাম রয়েছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান, বাজার কমিটির সভাপতি সকলেই জানেন এই জমি আমার মালিকানাধীন এবং সেই মর্মে তারা প্রত্যয়নও করেছে। আমি ঐ জমির খাজনা নিয়মিত পরিষোধ করছি। দোকানঘরটি আমার প্রয়োজন হওয়ায় ভাতিজাকে আমার ঘর ছেড়ে দিতে বললে সে নানা টালবাহানা শুরু করে। পরে আমি আমার ভাইকে ডেকে দোকানের মালামাল বুঝিয়ে দিয়ে আমার দোকান আমি বুঝে নিই।